সোনার গয়নার যত্ন, আসল-নকল পার্থক্য এবং গোল্ড প্লেটেড বনাম খাঁটি সোনা
সোনার গয়না দীর্ঘদিন চকচকে রাখতে কীভাবে যত্ন নিতে হয়? খাঁটি সোনার যত্ন পদ্ধতি
খাঁটি সোনার যত্ন পদ্ধতি : সোনার গয়নার সৌন্দর্য ধরে রাখতে হলে নিয়মিত যত্ন নেয়া প্রয়োজন। সোনার গয়না দীর্ঘদিন নতুনের মতো রাখতে চাইলে সঠিক যত্ন ও সংরক্ষণ পদ্ধতি জেনে নিন। সহজ উপায়ে ঝকঝকে রাখুন আপনার প্রিয় গয়না। নিচে কিছু কার্যকর টিপস দেয়া হলো:
- গয়না ব্যবহারের পর একটি নরম কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার করুন।
- পারফিউম বা হেয়ার স্প্রে লাগানোর পর গয়না পড়ুন, যেন রাসায়নিক গয়নায় না লাগে।
- গয়না আলাদা করে কটন বা ভেলভেট বক্সে সংরক্ষণ করুন, যাতে স্ক্র্যাচ না পড়ে।
- প্রতি ছয় মাসে একবার পেশাদার জুয়েলার দোকানে গিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
আরো জানুন : আজকের সোনার দাম
আসল আর নকল সোনার পার্থক্য কীভাবে বুঝবেন?
সোনা কেনার সময় আসল এবং নকলের মধ্যে পার্থক্য বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে প্রতারণার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে। নিচে কিছু অতিরিক্ত অথচ কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো:
১. 🔖 হ্যালমার্ক সনদ ও 916 ছাপ
আসল সোনায় সাধারণত BIS (Bureau of Indian Standards) অনুমোদিত হ্যালমার্ক থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত হলো:
- 916 = ২২ ক্যারেট
- 999 = ২৪ ক্যারেট
- 585 = ১৪ ক্যারেট
এই নম্বরগুলো গয়নার গায়ে খোদাই করে লেখা থাকে।
২. 🧲 চুম্বক দিয়ে পরীক্ষা খাঁটি সোনার যত্ন পদ্ধতি
- খাঁটি সোনা চুম্বকে আকর্ষিত হয় না। আপনি সহজেই একটি ছোট চুম্বক ব্যবহার করে দেখতে পারেন গয়নাটি আকৃষ্ট হয় কি না। আকৃষ্ট হলে বুঝবেন এতে অন্য ধাতু মেশানো আছে বা এটি নকল।
৩. 💧 অ্যাসিড টেস্ট (Gold Testing Acid)
- জুয়েলারি শপ বা পেশাদাররা সাধারণত সোনার বিশুদ্ধতা পরীক্ষার জন্য নাইট্রিক অ্যাসিড ব্যবহার করে। খাঁটি সোনা অ্যাসিডে প্রতিক্রিয়া দেখায় না, কিন্তু মেশানো বা নকল সোনা রঙ পরিবর্তন করে।
৪. 💡 রঙ এবং ঝকঝকে ভাব
- আসল সোনার রঙ স্বাভাবিক ও মোলায়েম। অতিরিক্ত ঝকঝকে বা অত্যধিক চকচকে গয়না সাধারণত গোল্ড প্লেটেড বা কোটেড হয়।
৫. ⚖️ ওজন যাচাই খাঁটি সোনার যত্ন পদ্ধতি
- খাঁটি সোনা অন্যান্য ধাতবের চেয়ে ভারী হয়। আপনি যদি একই আকৃতির দু’টি গয়না তুলনা করেন, তাহলে খাঁটি সোনা তুলনায় ভারী হবে।
৬. 📜 ক্রয় রশিদ ও সনদ
- বিশ্বস্ত দোকান থেকে কিনলে তারা আপনাকে ক্রয় রশিদ ও হ্যালমার্ক সার্টিফিকেট দেবে। এটি সোনার আসলত্ব প্রমাণে আইনি সহায়তাও দিতে পারে।
৭. 🧪 XRF মেশিন টেস্ট
- এখন অনেক আধুনিক জুয়েলারি দোকানে X-Ray Fluorescence (XRF) টেস্টের সুবিধা রয়েছে যা এক মিনিটেই বিশুদ্ধতা যাচাই করে দেয়, কোনো ক্ষতি ছাড়াই।
আরো জানুন : ডায়মন্ড চেনার উপায়
গোল্ড প্লেটেড এবং খাঁটি সোনার মধ্যে পার্থক্য কী?
অনেকেই গোল্ড প্লেটেড গয়নাকে খাঁটি সোনা ভেবে ভুল করেন। নিচে দুইটির মূল পার্থক্য তুলে ধরা হলো:
- গোল্ড প্লেটেড: এটি মূলত ধাতব গয়নার ওপর পাতলা সোনার স্তর দেয়া হয়। এটি দেখতে অনেকটা সোনার মতো মনে হলেও মূল্য এবং স্থায়িত্ব কম।
- খাঁটি সোনা: এটি সম্পূর্ণরূপে সোনা দিয়ে তৈরি, সাধারণত ২২ বা ২৪ ক্যারেট হয়ে থাকে। দাম বেশি হলেও এটি দীর্ঘস্থায়ী এবং রিসেল ভ্যালু ভালো।
- গোল্ড প্লেটেড গয়না দীর্ঘদিন ব্যবহারে রঙ ফেড হয়ে যায়, খাঁটি সোনায় তা হয় না।